August 2, 2025, 8:46 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরতœ শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী, হলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দায়িত্বরত হাউস টিউটর বক্তব্য শুনেছেন হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার কমিটি গঠনের দ্বিতীয় দিনে এই কমিটি হল প্রভোস্টের অফিসে বসে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এসময় হলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা ও তাবাস্সুমও হলে ছিলেন। তাদেরকে সকালেই হলে নিয়ে আসা হয়।
কমিটির সদস্যরা হলেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবুজর গিফারী, কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহবুব আলম।
হল সূত্রে জানা গেছে, যে রুমটিতে ফুলপরী খাতুন নামের সেই মেয়েটিকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে তদন্ত কমিটি ঐ রুমের আশে পশের রুমের আবাসিক ছাত্রীদের কয়েকজনের সাথে কথা বলেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান ঐ হলের প্রভোস্ট ড. শামসুল আলম তাদেরকে তদন্ত কমিটির সাথে কথা বলতে হবে জানান।
তদন্ত কমিটি কি বিষয়ে জানতে চেয়েছেন জিজ্ঞাসা করা হলে একজন ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান ঐদিন তারা পাশের রুমে কি ঘটেছিল তা টের পেয়েছিলেন কিনা তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
আরেকজন ছাত্রী জানান তদন্ত কমিটি বারবার ঐ রাতের ঘটনার কোন প্রত্যর্ক্ষীদর্শী বা ঘটনার খুব ছিলেন এমন কারো খোঁজ খবর বের করার চেষ্টা করছিলেন। ঐ ছাত্রী কে নির্ভয়ে কথা বলতে পেরেছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান তাতে কোন সমস্যা হয়নি।
মঙ্গলকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা শহীদ দিবসে ছুটি ছিল। বেলা ১১টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা হল প্রভোস্টেও কার্যালয়ে যান।
হল কতৃপক্ষ জানান তদন্ত কমিটির কাজের সুবিধার্থে হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেও ছুটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে।
প্রভোস্টের কক্ষে বসেই কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ হলে আবাসিক রয়েছেন এমন একজন শিক্ষার্থী মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান হলে সানজিদা চৌধুরী দাপট দেখাতেন। হলের বিভিন্ন বিষয়ে মাথা ঘামাতেন। তবে ঘটে যাওয়া ঘটনা সর্ম্পকে তিনি কিছু বলতে পারেন নি।
ওদিকে , বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা তদন্ত কমিটির সদস্যরাও মঙ্গলবার শেখ হাসিনা হলে যান। এ কমিটিও দ্বিতীয় দফায় ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা ও তাবাস্সুমের সাথে কথা বলেছেন।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা যথারীতি তেমন কোন কথা সংবাদ মাধ্যমে জানাতে অস্বীকার করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তদন্ত কমিটির আহবায়ক প্রফেসর রেবা মন্ডল জানান তারা তদন্ত কাজ যথেষ্ট গুছিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। যথা সময়ের মধ্যে রির্পোট জমা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন যদিও আবাসিক ছাত্রী নন তিনি ৮ ফেব্র“য়ারি দেশরতœ শেখ হাসিনা হলের একটি রুমে গেস্ট হিসেবে উঠেন। পরে ১৪ ফেব্র“য়ারি রাতে তাকে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন তিনি। তার ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তার ওপর নির্যাতন চালান। ওই ছাত্রী বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
নির্যাতনের ঘটনায় এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে সানজিদা ও তাবাসসুম যাতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে না পারেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
Leave a Reply